পবিত্র আশুরা সম্পর্কে বিস্তারিত ( ashura )

 

পবিত্র আশুরা সম্পর্কে বিস্তারিত
পবিত্র আশুরা সম্পর্কে বিস্তারিত

📖 পবিত্র আশুরা কী?

"আশুরা" শব্দটি আরবি "আশারা" (অর্থ: দশ) থেকে এসেছে। হিজরি ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস মহররম–এর ১০ তারিখকে বলা হয় পবিত্র আশুরা। এটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে ‍বিশেষভাবে স্মরণীয়।

ইবনে সিনা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ( Ibn Sina )


🔶 ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আশুরার গুরুত্ব

✨ নবীদের যুগে:

  • অনেক ইতিহাসবিদ ও হাদীসবিদগণ বলেন, এই দিনেই আল্লাহ্‌ তাআলা নবী নূহ (আ.)–কে তুফান থেকে রক্ষা করেন

  • এই দিনে মুসা (আ.) ও বনী ইসরাইলকে ফেরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি দেন

🩸 কারবালার ঘটনা:

  • হিজরি ৬১ সনে, মহররমের ১০ তারিখেই ইমাম হুসাইন (রা.), রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর প্রিয় নাতি, কারবালার ময়দানে শাহাদতবরণ করেন

  • ইরাকের কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে তার পরিবারের সদস্য ও সহচরদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।


☪️ ইসলামে আশুরা উপলক্ষে সুন্নত আমলসমূহ

✅ রোজা রাখা:

  • রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:

    "আমি আশাকরি যে, আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়।" (সহীহ মুসলিম)

  • হাদীসে আছে: আশুরার একদিন আগে বা পরে মিলিয়ে ৯ ও ১০ বা ১০ ও ১১ মহররম রোজা রাখা উত্তম।

✅ দান-সদকা:

  • সাহাবায়ে কেরাম আশুরা উপলক্ষে গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ করতেন।

✅ আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের প্রতি সদ্ব্যবহার:

  • হাদীসে আছে, “যে ব্যক্তি আশুরার দিন পরিবারকে সচ্ছলতা দেয়, আল্লাহ তার জীবনের প্রতিটি দিনেই সচ্ছলতা দিবেন।” (বায়হাকি)


🇧🇩 বাংলাদেশে আশুরা যেভাবে পালিত হয়

বাংলাদেশে আশুরা দিনটি সরকারি ছুটির দিন এবং তা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হয়।

🕌 ধর্মীয় কার্যক্রম:

  • মসজিদে বিশেষ ওয়াজ মাহফিল ও কোরআন তিলাওয়াত হয়।

  • মুসল্লিরা আশুরার রোজা পালন করে।

  • গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

🥀 শিয়া মুসলিমদের আয়োজন:

  • বাংলাদেশের ঢাকায় পুরান শহরের হোসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে ‘তাজিয়া মিছিল’ বের হয়।

  • এই মিছিলে ইমাম হুসাইনের আত্মত্যাগ স্মরণে শোক পালন করা হয়।

🚨 নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

  • আশুরার দিনে শিয়া মিছিলের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।


📌 গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

বিষয়বিবরণ
তারিখ১০ মহররম (চাঁদ দেখে নির্ধারিত)
সরকারি ছুটিহ্যাঁ
প্রধান স্থানহোসেনি দালান, পুরান ঢাকা
রোজা৯ ও ১০, বা ১০ ও ১১ মহররম
শ্রেষ্ঠ আমলরোজা, দান, ইবাদত, দোয়া

ইবনে সিনা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ( Ibn Sina )

ইবনে সিনা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ( Ibn Sina )
ইবনে সিনা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক ( Ibn Sina )


ইবনে সিনা (Ibn Sina) যিনি পশ্চিমা জগতে Avicenna নামে পরিচিত ছিলেন। ইসলামী স্বর্ণযুগের একজন কিংবদন্তি পণ্ডিত, চিকিৎসক, দার্শনিক ও বিজ্ঞানী। তাঁকে মধ্যযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদ এবং আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

🧠 ইবনে সিনা এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:

পুরো নাম: আবু আলি আল-হুসেইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা জন্ম: ৯৮০ খ্রিঃ, আফশানা (বর্তমান উজবেকিস্তান) মৃত্যু: ১০৩৭ খ্রিঃ, হামাদান, পারস্য (বর্তমান ইরান) ভাষা: আরবি ও পারসিয়ান ধর্ম: ইসলাম (শিয়া মতাদর্শের প্রতি আনুগত্যের ইঙ্গিত থাকলেও তিনি মূলত যুক্তিবাদী ও দার্শনিক চিন্তায় প্রভাবিত ছিলেন)

📚 প্রধান অবদান:

🩺 ১. চিকিৎসা (Medicine):

তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত বই হলো "আল-কানুন ফি আল-তিব্ব" (The Canon of Medicine) ইউরোপের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৬০০ বছর এটি পাঠ্যবই হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বিভিন্ন রোগের সংজ্ঞা, চিকিৎসা পদ্ধতি, ঔষধ তালিকা এবং শরীরবিজ্ঞানের ওপর অসামান্য অবদান রেখেছেন।

📖 ২. দার্শনিক চিন্তাধারা (Philosophy):

গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল ও প্লেটো-র দর্শনের ইসলামি ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তাঁর দার্শনিক চিন্তা পরবর্তীতে পাশ্চাত্য দর্শন ও থমাস অ্যাকুইনাসের মতো খ্রিস্টান দার্শনিকদের প্রভাবিত করে।

🧪 ৩. বিজ্ঞান ও গণিত:

জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতেও অবদান ছিল। “ভ্যাকুয়াম (শূন্যস্থান) সম্ভব নয়” — এই মতবাদ তিনিই প্রথম উত্থাপন করেন।

🧬 ৪. মনোবিজ্ঞান ও সাইকোথেরাপি:

ইবনে সিনা মানুষের চিন্তা, আত্মা এবং স্বপ্ন সম্পর্কেও বিশ্লেষণ করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, শারীরিক রোগ অনেক সময় মানসিক কারণেও হতে পারে — যা আধুনিক সাইকোথেরাপির পূর্বসূরি।

🏛️ বিখ্যাত কিছু গ্রন্থ:

আরবি নাম ইংরেজি নাম الكتاب الشفاء (Al-Shifa) The Book of Healing (দার্শনিক এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ) القانون في الطب (Al-Qanun fi al-Tibb) The Canon of Medicine (চিকিৎসাবিদ্যার বিশ্বকোষ)

🏅 ইবনে সিনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

ইউরোপে তাঁকে "Prince of Physicians" বলা হত। ইসলামি সভ্যতা ও ইউরোপিয়ান রেনেসাঁ যুগের মাঝে একটি সেতুবন্ধন রচনা করেন। তাঁকে ইসলামী স্বর্ণযুগের রত্ন হিসেবে গণ্য করা হয়।

🔚 উপসংহার:

ইবনে সিনা ছিলেন একাধারে চিকিৎসক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী এবং কবি। তাঁর বহুমাত্রিক অবদান শুধু মুসলিম বিশ্ব নয়, গোটা মানব সভ্যতার ইতিহাসে অমূল্য সম্পদ।

ওমরাহ ভিসা নিয়ে আপডেট ( Umrah Visa )

ওমরাহ ভিসা নিয়ে আপডেট
ওমরাহ ভিসা নিয়ে আপডেট


সৌদি আরব ২০২৫ সালের ১০ জুন থেকে ওমরাহ ভিসা আবার চালু করেছে

নিচে বিস্তারিত আপডেট সহ প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো:

১. সাম্প্রতিক আপডেট

ঐতিহাসিক অবরুদ্ধ অবস্থা: হজ চলাকালীন (২০২৫ সালের ৪–৯ জুন) এবং তারও আগে এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ সহ ১৩–১৪ দেশের জন্য ওমরাহ ভিসা বন্ধ ছিল
চলতি অবস্থা: ১০ জুন থেকে পুনরায় नयाँ আবেদন গ্রহণ শুরু, তবে জিল হজ্জের পরে বা জুন-মধ্যের দিকে রিজিউম হয়েছে, যা বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্যও প্রযোজ্য ।

২. আবেদন ও অবস্থান সময়কাল

ই-ভিসা সুবিধা: এখন অনলাইনে ই-ভিসা পাওয়া যাচ্ছে, যার মেয়াদ এক বছর, মাল্টিপল এন্ট্রি সুবিধা, এবং ৯০ দিন পর্যন্ত অবস্থান অনুমতি রয়েছে
ইস্যু হয়: ১০ জুন ২০২৫ থেকে (হজের কয়েক দিন পর) এবং সর্বশেষ জানানো অনুযায়ী, প্রক্রিয়া বর্তমানে সচল রইল।

৩. বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় যা করতে হবে

বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ ভিসা পেতে সাধারণত নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রয়োজন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিস্তারিত বৈধ পাসপোর্ট অন্তত ৬ মাসের মেয়াদ, খালি পেজ কমপক্ষে ৪টি ছবি পাসপোর্ট সাইজ, ২ কপি স্মার্ট/এনআইডি অরিজিনাল কপি মহরাম/জন্মনিবন্ধন মহিলাদের জন্য মহরাম লাইসেন্স, শিশুদের জন্য জীবাণু/টিকা কোভিড-১৯-র প্রয়োজনীয় টিকা কার্ড, মেনিনজোকোক্যাল টিকা (ওমরাহ, হাজ্জে প্রযোজ্য) পেমেন্ট মাধ্যম ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড
৪. আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইন আবেদন – সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের “Nusuk” বা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে আবেদন ফর্ম পূরণ। ফি পরিশোধ – ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডে নিয়ে।
জীবোমেট্রিক – বাংলাদেশিদের জন্য আঙুলের ছাপ ও বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া প্রযোজ্য ভিসা ইমেইল পেতে হবে – অনুমোদনের পরে ই-ভিসা ইমেইলে পাঠানো হবে।

৫. আপনার করণীয়

এজেন্সির মাধ্যমে টিকেট ও প্যাকেজ – বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান (যেমন Holy Hajj & Umrah, Hijaz Hajj) রয়েছে যারা সম্পূর্ণ প্যাকেজ (টিকেট, হোটেল, পরিবহন) অফার করে
নজরে রাখুন – যেহেতু ওমরাহ সিজনের জন্য ভিসা নিয়মাবলী মাঝে মাঝে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই চলতি সূত্র বা সৌদি দূতাবাসের ওয়েবসাইট মনিটর করুন।

উপসংহার
বর্তমান অবস্থা: ১০ জুন ২০২৫ থেকে ওমরাহ ভিসা পুনরায় গ্রহণযোগ্য, আগের মতো অনলাইনে ইস্যু হচ্ছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রস্তুতি: পাসপোর্ট, ছবি, এনআইডি, টিকা, মহরাম ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখুন। জীবনবিমা ও ই-ভিসা সুবিধা: ৯০ দিন অবস্থান, এক বছর পর্যন্ত বৈধতা এবং মাল্টি এন্ট্রি সুবিধা রয়েছে।